বাজেটের আগে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো ও তাদের সংগঠন এমটব বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বৈঠক দেনদরবার করলেও তাদের প্রাপ্তির হাত শূন্য। অবশ্য এর আগের বাজেটেও তেমন কিছুই পায়নি অপারেটরগুলো যদিও দাবিদাওয়া বলতে গেলে একই ছিলো।
অপারেটরগুলোর অন্যতম দাবি ছিলো, কর্পোরেট ট্যাক্স কমানো। দেশে অপারেটররা ৪৫ শতাংশ কর্পোরেট দেয়। ভারতে এটি ২২ শতাংশ , পাকিস্তান এবং নেপালে ৩০, শ্রীলঙ্কায় ২৮ এবং আফগানিস্তানে ২০ শতাংশ। অপারেটররা এই ট্যাক্স ৩০ শতাংশ করার দাবি করে আসছিলো।
কিন্ত নতুন বাজেটে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটর কোম্পানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ এই কর বহাল রাখা হয়েছে।
আরেকটি দাবি নিয়ে অপারেটরা গুরুত্বে সঙ্গে বলে আসছে তা হলো ন্যূনতম টার্নওভার বা কর্পোরেট ট্যাক্স তুলে দেয়া। মোবাইল অপারেটরগুলো লোকসান করলে বা মুনাফা ২ শতাংশের কম হলেও ২ শতাংশ হারে এই কর দিতে হয়। শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটি থেকে এই কর দেয়া হয়।
কিন্তু নতুন বাজেটে এর কোনো পরিবর্তন আসেনি।এছাড়া সিম ট্যাক্স তুলে দেয়া। বর্তমানে সিম প্রতি ২০০ টাকা হারে কর রয়েছে। অপারেটররা এই অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দেয়।
অপারেটরগুলো দ্বৈত কর পরিহার চাইছিলো। তাদের বক্তব্য, দেশের মোবাইল সেবাদাতারা তাদের মোট আয়ের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রাজস্বের অংশ হিসাবে এবং ১ শতাংশ সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে (এসওএফ) বিটিআরসিকে প্রদান করে। প্রাথমিক পর্যায়ে, রাজস্বের জন্য ভ্যাট প্রদান করা হয় যার অংশ বিটিআরসিকে দেওয়া হয়। বিটিআরসিকে দেওয়া একই রাজস্বের জন্য যখন আবার ভ্যাট প্রদান করা হয় তখন তা দ্বৈত কর হয়ে যায়।
এ বিষয়ে কোনো বার্তা নেই অপারেটরগুলোর জন্য। রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এবং এমটব সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, যথেষ্ট যৌক্তিকতা থাকার পরেও টেলিযোগাযোগ খাতে যে পরিবর্তনসমূহ আশা করা হয়েছিলো তার কোনোটিই দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। এর ফলে আগামী বছরগুলোতে এ শিল্পটি দ্রুত গতিতে অগ্রসর হওয়ার পরিবর্তে আরও কঠিন সময় অতিক্রম করবে, যা সার্বিকভাবে দেশের ডিজিটাইজেশনের গতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবঃ) বলেন, সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতের যে অবদান এবং এই খাতে যে কর ব্যবস্থা বিদ্যমান তার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা খুব জরুরী। তদুপরি, যখন উন্নততর প্রযুক্তিতে যুক্ত হওয়ার জন্য কাজ করা হচ্ছে তখন বর্তমান কর কাঠামো ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে। সরকার তাদের প্রস্তাবগুলিতে পুনর্বিবেচনা এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটের সংস্কার করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিজনেস/এমআর