বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা স্কুল না পড়েই ১০ মিনিটেই মিলছে সনদ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সনদ পাঁচ হাজার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ ১০ হাজার টাকা। বানানো যাবে যে কোনো দলিল দস্তাবেজের হুবহু কপিও। মূল সনদে থাকা নাম, রোল নম্বর পরিবর্তন করে মনগড়া নাম, নম্বর ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে নকল সনদ।
নকল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, আইনের আওতায় আনা হবে নকল সনদধারীদেরও।
একটি মাধ্যমিকের সনদ পেতে একজন শিক্ষার্থীর অপেক্ষা করতে হয় ১০ বছর। এর পেছনে থাকে অনেক শ্রম, মেধা আর আর্থিক বিষয়। অথচ নীলক্ষেতের বাকুশাহ মার্কেটের এক দোকানি মাত্র ১০ মিনিটেই তৈরি করে ফেলেন সেই সার্টিফিকেট। খরচও সামান্য। ব্যক্তিভেদে পাঁচ থেকে ২০ হাজার টাকা।
গত পাঁচ বছর ধরে এভাবেই যে কোনো পাবলিক পরীক্ষার জাল সনদ তৈরি করে আসছেন তিনি। একটি কম্পিউটার, একটি প্রিন্টার আর কিছু কাগজপত্র। বিনিয়োগ এতটুকুই।
তিনি বলেন, কাস্টমার যখন আসেন, তার নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম নিয়ে এখানে টাইপ করি। কোন গ্রুপ নেবে, সেটা বসাই। পয়েন্ট, জন্মতারিখ ইত্যাদি দিয়ে প্রিন্ট করে সরবরাহ করি।
জাল সার্টিফিকেট তৈরি চক্রের প্রধানসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তিন ধাপে কাজ করে চক্রটি। প্রথম ধাপে তারা সনদপ্রত্যাশীদের খুঁজে বের করেন। মাঝখানে থাকে একটি দালাল শ্রেণি, যাদের কাজ চুক্তি করা। শেষ ধাপে থাকে কিছু কম্পিউটার কম্পোজের দোকানি।
মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক থেকে শুরু করে পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদালয়ের সব সনদই তৈরি করে চক্রটি। জমির জাল দলিল বানাতেও দক্ষ তারা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিজুল হক বলেন, সনদগুলো এমনভাবে বানানো হয়, যেখানে খালি চোখে দেখে আসল-নকল বুঝতে কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে বেসরকারি পর্যায়ে যে চাকরিগুলো আছে, যেখানে সনদগুলো যাচাইয়ের সুযোগ কম, সেখানে তারা এসব সনদ দিয়ে চাকরি করেন।
পুলিশ বলছে, নকল সনদপ্রত্যাশীরাও সমান অপরাধী। আইনের আওতায় আনা হবে তাদেরকেও। নিয়োগের আগে সার্টিফিকেট যাচাই করার পরামর্শ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে।
বিজনেস/এমআর