গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসের পর নতুন সপ্তহের প্রথম দিনেও বড় পতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। টানা তিন কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১১৫ পয়েন্টেরও বেশি। এর আগে গত সপ্তাহের প্রথম ও আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স পয়েন্ট হারিয়েছিল ২৭২। সেখান থেকে গত সপ্তাহের দ্বিতীয় ও তৃতীয় কার্যদিবসে ৭৮ পয়েন্ট ফিরলেও পরের টানা তিন কার্যদিবসে সূচকটি আবারো ১১৫ পয়েন্ট হারালো। এর মাধ্যমে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধে বিশ্ব উত্তাল হওয়ার পরে টানা সাত কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচদিনই পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। এই পাঁচ কার্যদিবসের পতনে ডিএসইক্স থেকে ৩০৯ উধাও হয়ে গেছে। অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআইও এই সাত কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচদিনই পয়েন্ট হারেয়েছে।
এদিকে টানা পতনের তৃতীয় দিনে আজ রোববার ডিএসইএক্স সূচকটি ৫৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৬৩৯ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ এদিন ২৪ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১১ পয়েন্ট হারিয়েছে। দিন শেষে সূচক দুটির অবস্থান দাঁড়ায় যথাক্রমে ২৪৩৮ ও ১৪৩১ পয়েন্ট।
আজ ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে মাত্র ৯৮টির, অন্যদিকে কমেছে ২৪৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টি সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য। এদিন ডিএসইতে মোট ৬১৫ কোটি ৫৬ লাখ ৩১ হাজার টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, আগের কার্যদিবসে এ লেনদেন ছিল ৬৪৪ কোটি ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
আজ স্টক এক্সচেঞ্জটিকে বড় পতনের দিকে ঠেলে দিতে সবথেকে বেশি অবদান রেখেছে বীমা খাত, আর্থিক খাত, বস্ত্র খাত, ওষুধ ও রসায়ন খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, প্রকৌশলী খাত, বিবিধ খাত এবং ব্যাংক খাত। এদিন সাধারণ বীমা খাতের ৯০ শতাংশ শেয়ারের দর পতন হয়েছে। এছাড়া জীবন বীমা খাতের ৮৪ শতাংশ, আর্থিক খাতের ৮১ শতাংশ, ব্যাংক খাতের ৮০ শতাংশ, বস্ত্র খাতের ৭১ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৭০ শতাংশ, প্রকৌশলী খাতের ৬৯ শতাংশ এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৬৮ শতাংশ শেয়ারদর এদিন পতন হয়েছে।
আজ একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সব থেকে বেশি দর হারিয়েছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এদিন প্রতিষ্ঠানটির দর কমেছে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ বা ১ টাকা ৫০ পয়সা। দর কমার তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির এদিন দর কমেছে ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ বা ২ টাকা ৮০ পয়সা। তৃতীয় অবস্থানে পতন হওয়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এদিন দর কমেছে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ৬ টাকা ২০ পয়সা।
দর হারানোর তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ৫ দশমিক ২০ শতাংশ, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ, কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ, প্যাসিফিক ডেনিমসের ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ, আরামিট সিমেন্টের ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ৪ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ এবং অগ্রাণী ইন্স্যুরেন্সের ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ দর কমেছে এদিন।
অন্যদিকে সিএসইতে আজ প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৭৯ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৬৬৮ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। আর সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই এদিন ১২৭ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ৪৪৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৫টির, কমেছে ১৫৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩১টির বাজারদর। সিএসইতে এদিন মোট ১৭ কোটি ৮১ লাখ ৩১ হাজার ৯১৯ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪৬০ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২০ কোটি ৯২ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭৯ টাকার সিকিউরিটিজ।