Home অর্থনীতি সাজছে রাজধানীর পশুর হাট

সাজছে রাজধানীর পশুর হাট

সাজছে রাজধানীর পশুর হাট

ঈদুল আজহার বাকি দুই সপ্তাহেরও কম। প্রতি বছর এই ঈদকে কেন্দ্র করে জমে ওঠে কোরবানির পশুর হাট-বাজার। সাধারণত ঈদের ১০-১৫ দিন আগে থেকে স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলো সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে শুরু হয়েছে সেই প্রস্তুতি; চলছে শেষ মুহূর্তের তোড়জোড়

এ বছর রাজধানীতে মোট ১৯টি কোরবানির পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে দুটি হলো স্থায়ী হাট, যেগুলোতে বছরের অন্য সময়ও পশু বিক্রি হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে রয়েছে গাবতলী স্থায়ী হাট আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে রয়েছে সারুলিয়া স্থায়ী হাট। এই হাট দুটি ছাড়া ১৭টি অস্থায়ী হাট বসানো হবে।

অস্থায়ী হাটগুলোর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবে ১০টি আর উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবে ৭টি। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ডিজিটাল হাট চালু থাকবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার রমজানের পর থেকে গরুর দাম বাড়তি। কোরবানির হাটেও সেই প্রভাব থাকবে। পাশাপাশি সিলেট-সুনামগঞ্জ আর উত্তরাঞ্চলের বন্যার প্রভাবও বাজারে পড়বে। অর্থাৎ গরুর দাম এবার বেশি হতে পারে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট সাজানো হচ্ছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে নতুন নতুন অস্থায়ী শেড। আকর্ষণীয় ডিজাইনে সাজানো হচ্ছে প্রধান ফটক। বসানো হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার। বিকাশ ও রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্যও বুথ তৈরি করা হচ্ছে।

বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিশাল ছাউনি। হাটের ভেতরের রাস্তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও অপ্রয়োজনীয় কাদামাটি অপসারণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে গণশৌচাগারের আশপাশে মাটি ফেলে তা ব্যবহার উপযোগী করার কাজও চলছে।

ভারতীয় গরু চোরাচালান বন্ধের দাবি জানিয়ে আরেক গরু ব্যবসায়ী বিশু বেপারি বলেন, ২০ বছর ধরে এ হাটেই আছি। কিছু সময় গেছে, সে বছর হয়ত মূলধনের টাকাও তুলতে পারিনি। আবার কোনো ঈদ গেছে দুই ঈদের আয় এক হাটেই করেছি। এবার ভালো দামের আশা করছি।

রাশেদুল ইসলাম বাবু নামে আরেক গরু ব্যবসায়ী বলেন, গরু লালন-পালনে খরচ বেড়েছে। হাটেই নিয়মিত ৩ জন রাখালসহ ৫-৬ জনের শ্রম যাচ্ছে। প্রতিদিন ৬০০-৭০০ টাকা দিতে হয় রাখালদের। গরুর দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই।

৭০ কেজি ওজনের দুম্বা, দাম লাখ টাকা

সাজছে রাজধানীর পশুর হাট

পশুর হাটের একটি অংশে দেখা যায়, দুটি শেডে রাখা হয়েছে বেশ কিছু দুম্বা। চাহিদা অনুযায়ী দুম্বা আমদানি এবার বাড়বে বলে মনে করেন আনসার আলী নামে এক ব্যবসায়ী।

তিনি বলেন, ২০ কেজি থেকে ৭০ কেজি ওজনের দুম্বা আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এবার গরু ও মহিষের দাম বাড়তি থাকায় দুম্বায় আকর্ষণ বাড়বে। ছাগলের তুলনায় দুম্বার দাম খুব বেশি হবে না। সেই আশায় দুম্বার স্যাম্পল রেখেছি। ৫০ কেজি ওজনের দুম্বা ৭০ হাজার, ৭০ কেজি ওজনের দুম্বার দাম পড়বে লাখ টাকা। আর অর্ডার পেলে আমদানি শুরু করব।

গরুর চেয়ে মহিষের দাম বেশি

মহিষের দাম এবার কেমন হবে সে ধারণা দেন জজ বেপারির রাখাল শরিফ। তিনি বলেন, গরুর মাংসের চেয়ে এখন মহিষের মাংসের দাম বেশি। এবার মহিষের আমদানি কম। তাছাড়া গরুর মাংসের বাড়তি দামের কারণে মহিষের দামও বেড়েছে। ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি মহিষের মাংস। এখানে ১২ মণ ওজনের একেকটি মহিষের দাম হাঁকা হচ্ছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

করোনা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে থাকায় পশুর হাট এবার বেশ জমজমাট হবে বলে আশা করছেন হাট সংশ্লিষ্টরা। গত বছর বেপারিরা ক্ষতির মুখে পড়ে ছিলেন। এবার ভালো লাভের আশা করছেন তারা।