করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের বিধিনিষেধের কারণে ঈদের ব্যবসা মার খাচ্ছে বব্যসায়ীরা। এবার সুযোগ না পেলে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে যাবেন বলে জানাচ্ছে তারা।
সপ্তাহখানেক পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। বড় এই উৎসবকে ঘিরেই দেশের পোশাকের ব্যবসা চাঙা হয়। সে জন্য রোজা শুরুর মাসখানেক আগে থেকেই ব্যবসা জমতে শুরু করে পাইকারি বাজারে। গতবার করোনার কারণে ছন্দপতন হলেও চলতি বছর ভালো ব্যবসার আশা করছিলেন পাইকারেরা। তবে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সরকারি বিধিনিষেধের কারণে দোকানপাট বন্ধ। এতে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন পাইকারেরা।
দেশের ভেতর তৈরি পোশাকের বড় তিন পাইকারি বাজার ইসলামপুর, বাবুরহাট ও কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গতবার কোনো ব্যবসা হয়নি। সেই লোকসান পোষাতে এবার ব্যবসায়ীরা বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেন। এ অবস্থায় রোজার আগে দোকান খুলতে না পারলে অনেকেই আর ব্যবসায় টিকতে পারবেন না। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে হলেও দোকানপাট খোলার দাবি ব্যবসায়ীদের।
দেশি-বিদেশি থান কাপড় থেকে শুরু করে থ্রিপিস, শাড়ি, লুঙ্গি, বাচ্চাদের পোশাক, বিছানার চাদর, পর্দার কাপড় ইত্যাদি পাওয়া যায় ইসলামপুরে। তা ছাড়া কাপড় তৈরির সব ধরনের সরঞ্জামও পাওয়া যায়। সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ব্যবসায়ী নেতারা জানান, বছরে ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয় ইসলামপুরে, যার ৫০ শতাংশের কাছাকাছি হয় রোজার মাসে।
ইসলামপুরের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস দুই থেকে তিন মাস আগে থেকেই থান কাপড় কিনছে। অন্যদিকে প্রস্তুত করা পোশাক গত মাস থেকে কিনতে আসছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। তবে রোজার দুই সপ্তাহ আগে থেকে বেচাবিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। সেটি কেবল শুরু হয়েছিল। তখনই সরকার করোনা সংক্রমণে বিধিনিষেধ দেয়।
এদিকে কেরানীগঞ্জের পোশাকপল্লিতে ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা জমতে শুরু করেছিল। গত শুক্র ও শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত অনেক পাইকারি ব্যবসায়ী পোশাক বিক্রি করেছেন। তবে সরকারি বিধিনিষেধের কারণে সোমবার থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পূর্ব আগানগর, আগানগর ছোট মসজিদ রোড, চর কালীগঞ্জ ও খেজুরবাগ এলাকায় গড়ে ওঠা এই পোশাকপল্লিতে সুনসান নীরবতা।
কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. স্বাধীন শেখ বলেন, ‘নতুন করে বিধিনিষেধের সময়সীমা বাড়ালে ব্যবসায়ীরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। আমাদের পাইকারি বাজারে ১৫-২০ রোজা পর্যন্ত ব্যবসা হয়। তারপর ক্রেতাদের ভিড় থাকে না।’